কার্বলিক এসিডের ক্ষতিকর দিক - কার্বলিক এসিড হাতে পড়লে করণীয় কাজ

proudwin.com

28 Aug, 2023

প্রিয় পাঠক , আপনি কি কার্বলিক এসিডের ক্ষতিকর দিক - কার্বলিক এসিড হাতে পড়লে করণীয় কাজ সম্পর্কে জানতে চান ? তাহলে আজকের এই ব্লগ পোস্টটি আপনার জন্য। তো চলুন আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট না করে শুরু করা যাক আমাদের আলোচনার মূল আলোচ্য বিষয়, কার্বলিক এসিডের ক্ষতিকর দিক - কার্বলিক এসিড হাতে পড়লে করণীয় কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত।

আমার আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে শেষ পর্যন্ত পড়লে আপনি জানতে পারবেন, কার্বলিক এসিডের ক্ষতিকর দিক - কার্বলিক এসিড হাতে পড়লে করণীয় কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত। এজন্য আজকের আর্টিকেলটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে। তাই শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইলো।

কার্বলিক এসিড হাতে পড়লে করণীয়

কমবেশি আমরা সবাই জানি, এসিড আমাদের শরীরের জন্য কতটা মারাত্মক । তবে সকল এসিড নয়, কিছু কিছু এসিড রয়েছে যেগুলো শরীরের যে কোন স্থানে পড়লে কোন প্রভাব ফেলে না। আবার অনেক এসিড রয়েছে, যেগুলো আমাদের শরীরের যে কোন স্থানে পড়লে শরীরকে পুড়িয়ে ফেলে। বিশেষ করে সালফিউরিক এসিড আমাদের শরীরের যে কোন স্থানে পড়লে সেই স্থান গলে যায়। আরো

আরো পড়ুনঃ খালি পেটে লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা বিস্তারিত জানুন

এমন আরো এসিড রয়েছে যেমনঃ কার্বলিক এসিড। এজন্য এসিড থেকে শরীরকে দূরে রাখতে হবে। আজকে আমরা জানবো, কার্বলিক এসিড হাতে পড়লে করণীয়। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক, কার্বরলিক এসিড হাতে পড়লে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত।

প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে কার্বলিক এসিড হাতে পড়লে হাত পানিতে চুবিয়ে রাখতে হবে। তৎক্ষণাৎ যদি কোন টিস্যু অথবা কাপড় থাকে তাহলে, হাতের উপর দিয়ে টিস্যু বা কাপড়ের দিয়ে তার ওপর দিয়ে পানি ঢালতে হবে। এরপরে আস্তে আস্তে টিস্যু বা কাপড়টিকে সরিয়ে নিতে হবে। কার্বলিক এসিড হাতে পড়লে করণীয় হিসাবে এই কাজ অবশ্যই করতে হবে।

টিস্যু বা কাপড় দেওয়ার কারন হল অনেক সময় দেখা যাই ক্ষত স্থানের উপরে সরাসরি পানি দিলে সেখানে ইনফেকশন হতে পারে। এজন্য কার্বলিক এসিড হাতে পড়লে হাত-পানিতে চুবিয়ে রাখা অবস্থায় অতিসত্বর রোগীকে হাসপাতালে চিকিৎসকের সংস্পর্শে নিতে হবে।

কার্বলিক এসিড হাতে পড়লে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন ঔষধ লাগানো যাবে না। কারণ এসিড হাতে পড়লে সেখানে মারাত্মক ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। কার্বলিক এসিড হাতে পড়লে করণীয় হিসেবে চিকিৎসকেরা অনেক সময় বিভিন্ন মলম ও সাপ্লিমেন্ট ব্যবহারের নির্দেশ দিয়ে থাকে।

এজন্য কার্বলিক এসিড হাতে পড়লে করণীয় হিসাবে প্রাথমিক চিকিৎসায় যে জায়গায় কার্বলিক এসিড পড়েছে সেই স্থানের উপর কাপড় দিয়ে প্রচুর পরিমাণে পানি ঢালতে হবে। এখানে মনে রাখতে হবে কখনোই গরম পানি অথবা অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি দেওয়া যাবে না। সাধারণ পানি দিতে হবে। যত দ্রুত পারা যায় অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।

আশা করি কার্বলিক এসিড হাতে পড়লে করণীয় হিসাবে উপরোক্ত কাজ করলে কার্যকর চিকিৎসা হিসাবে বিবেচিত হবে।

কার্বলিক এসিডের সংকেত

মূলত ফেনল হলো কার্বলিক এসিড এর পরিচিত রূপ। আসলে কার্বলিক সাবান তৈরিতে মূলত ফেনল ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কার্বলিক এসিডের সংকেত C6H5OH

কার্বলিক এসিড ব্যবহারের নিয়ম

যে কোন এসিড ব্যবহারের পূর্বে এসিডের নীতিমালা অবশ্যই জেনে রাখতে হবে। কারণ যে কোন এসিড যেমনঃকার্বলিক এসিড ব্যবহারের পূর্বে এর নিয়মাবলী অবশ্যই জানতে হবে। কারণ নিয়মাবলী না জানলে এসিডের সঠিক ব্যবহার করা যাবে না। নিয়ম না জেনে এসিড ব্যবহার করলে শারীরিক ও মানসিক বিভিন্ন অস্বাভাবিক প্রভাব পরিলক্ষিত হতে পারে।

কার্বলিক এসিড ব্যবহারের সময় মুখে মাস্ক, হাতে গ্লোবস এবং শরীরে সার্জিক্যাল পোশাক পরিধান করতে হবে। কার্বলিক এসিডের গন্ধ ঝাঁঝালো হয়ে থাকে এর কারণে এটি কখনোই শরীরে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না। কার্বলিক এসিড ব্যবহারের নিয়ম হলো এটি ব্যবহারের সময় উপরোক্ত পোশাক পরিধান করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ হামদর্দ সাফি সিরাপ খেলে কি ওজন কমে - সাফি সিরাপ খেলে কি মোটা হয়?

এছাড়া কার্বলিক এসিড ব্যবহারের নিয়ম এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো কার্বলিক এসিডের পাত্র থেকে কার্বলিক এসিড নেওয়ার পরে পাত্রের মুখ খুব ভালোভাবে বন্ধ করে রাখতে হবে। এছাড়া কার্বলিক এসিড যে পাত্রে ঢালা হবে সেটি যেন কাঁচের হয় কারণ।

কাঁচের পাত্রের সাথে কার্বলিক এসিড বিক্রিয়া করতে পারে না। কার্বলিক অ্যাসিড ব্যবহারের পরে সেটি নির্দিষ্ট স্থানে পুঁতে রাখতে হবে। যাতে জনসম্মুখে না আসে। কার্বলিক এসিড মূলত বাসা বাড়ি থেকে সাপের উপদ্রব কমানোর উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

কার্বলিক এসিডের ক্ষতিকর দিক

প্রত্যেক এসিডের যেমন ক্ষতিকর দিক রয়েছে ঠিক তেমনি কার্বলিক এসিডের ক্ষতিকর দিক ও রয়েছে। কার্বলিক এসিড অসাবধানতার সাথে ব্যবহার করলে এটি দীর্ঘমেয়াদে স্থায়ী রোগের কারণ হতে পারে। কার্বলিক এসিড খেলে পাকস্থলী এবং পরিপাকতন্ত্রের মারাত্মক ক্ষতিসাধন হতে পারে। এছাড়া যে সব তন্ত্র পরিপাকতন্ত্রের সাথে সম্পৃক্ত সেসব তন্ত্রের স্থায়ী ক্ষতিসাধন হতে পারে।

যেহেতু কার্বলিক মানুষের জন্য একটি বিষ এজন্য যদি এই কার্বলিক এসিড কেউ খেয়ে ফেলে তাহলে সঠিক চিকিৎসা না করলে নিশ্চিত সে মানুষটি মারা যাবে। কারণ এই এসিডের উপাদানের মধ্যে এমন কিছু রয়েছে যেটা মানুষকে মেরে ফেলতে পারে। তবে অন্যান্য বিষের মতো কার্বলিক এসিড এতটা ক্ষতিকর নয়। যদি কেউ কার্বলিক এসিড খাই তাহলে তার চিকিৎসার জন্য কিছুক্ষণ সময় থাকে।

সে সময় অবশ্যই অভিজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু বাচ্চাদের ক্ষেত্রে কার্বলিক এসিডের ক্ষতিকর দিক অত্যন্ত ভয়াবহ। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ কার্বলিক এসিড খাওয়ার পরে যতক্ষণ সুস্থ থাকে বা চিকিৎসা গ্রহণের সময় পাই কিন্তু কোন বাচ্চা যদি কার্বলিক এসিড খেয়ে ফেলে তাহলে তৎক্ষণাৎ মারা যেতে পারে।

আবার অনেক ক্ষেত্রে সাপ তাড়ানোর জন্য বা সাপকে মারার জন্য বা সাপকে তাড়ানোর জন্য কার্বলিক এসিডের ব্যবহার হয়ে থাকে। কিন্তু যেই ব্যক্তি কার্বলিক এসিডের ব্যবহার করছে বা কার্বলিক এসিডের মুখ খুলছে সেখান থেকে যেহেতু কার্বলিক এসিডের বিষাক্তকর ধোঁয়া বা গ্যাস বের হয় সেজন্য যে ব্যক্তি কার্বলিক অ্যাসিডের ব্যবহার করবে তাকে অবশ্যই নাকে মাস্ক পড়ে কার্বলিক এসিডের ব্যবহার করতে হবে।

যদি কোন ব্যক্তি কার্বলিক এসিড ব্যবহারের সময় কোন ব্যক্তি মুখে মাস্ক না পড়ে কার্বলিক এসিডের ব্যবহার করে তাহলে সে ব্যক্তির শ্বাসতন্ত্রের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি হতে পারে এবং গুরুতর পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে সে ব্যক্তি মারাও যেতে পারে। এজন্য আমাদের কার্বলিক অ্যাসিড ব্যবহারের সময় অতি সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। যদি সঠিকভাবে সতর্কতা পালন না করা হয় সে ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যের এবং পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কার্বলিক এসিড সরাসরি ত্বকে লেগে গেলে সেখানে পুড়ে যেতে পারে এবং ফোসকা পড়তে পারে। গবেষণাগারে কাজ করার সময় কার্বলিক এসিড নিঃশ্বাসের সাথে শরীরের মধ্যে প্রবেশ করলে ফুসফুসের বিভিন্ন ধরনের রোগ হতে পারে। যেগুলো স্বাস্থ্যের জন্য খুবই মারাত্মক ক্ষতিকর। এজন্য আমাদের সব সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে কার্বলিক এসিডের ব্যবহার করতে হবে।

কার্বলিক এসিড দাম

কার্বলিক এসিড দাম স্থায়ীভাবে বলা সম্ভব নয়। কারণ এটি বাজারের রেট এর ওপরে নির্ভর করে। তবে কার্বলিক এসিড দাম ৬০ টাকা থেকে ৯০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

কার্বলিক এসিড কোথায় পাওয়া যায়

আগে কার্বলিক এসিড মূলত পাওয়াই যেত না। কারণ আগে এর প্রচলন ছিল না বললেই চলে। কিন্তু বর্তমানে কার্বলিক এসিড যেকোনো সার বা কীটনাশক এর দোকানে পাওয়া যায়।

কার্বলিক এসিড সাপ তাড়াতে

বিশেষ করে যেসব অঞ্চলে কয়েকদিন পর পরেই বন্যা হয়ে থাকে, সেসব অঞ্চলে বিষাক্ত সাপ থেকে রক্ষা পেতে কার্বলিক এসিড ব্যবহার করে থাকে। বিশেষ করে বন্যাকবলিত অঞ্চলের মানুষ শোবার ঘরে একটি নির্দিষ্ট স্থানে কার্বলিক এসিড একটি পাত্রে রেখে সেই পাত্রের মুখ খুলে রেখে দেয়।

আরো পড়ুনঃ শিমুল মূল পাউডার খাওয়ার নিয়ম - শিমুল মূলের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

কারণ কার্বলিক এসিডের ঝাঝালো গন্ধের কারণে যেকোনো ধরনের সাপ আসতে পারেনা। এগুলো বেশিরভাগ বন্যা কবলিত অঞ্চলের মানুষেরা ব্যবহার করে থাকে। এছাড়া যদি কার্বলিক এসিড যদি না থাকে তাহলে রসুন ফালা ফালা করে কেটে ঘরের চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখলে রসুনের গন্ধের কারণে সাপ আসে না।

যদিও সাপ ঘরের মধ্যে থেকে থাকে এই গন্ধের কারণে সাপ বেরিয়ে যেতে বাধ্য হয়। এছাড়া কার্বলিক এসিড একটি বোতলে রেখে সেই বোতলের মুখ হালকা ছিদ্র করে দিয়ে বাড়ির আশপাশে রেখে দিলেও সাত আসতে পারে না।

কার্বলিক এসিড যুক্ত সাবান

উপরোক্ত সকল তথ্য অনুসারে আমরা জেনে এসেছি কার্বলিক এসিড মানব দেহের জন্য কতটা ভয়ংকর। এজন্য কার্বলিক এসিড দিয়ে তৈরি সাবান ও আমাদের দেহের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। এজন্য কার্বলিক এসিডযুক্ত সাবান কখনোই ব্যবহার করা যাবে না। সাবান কেনার সময় অবশ্যই দেখে নিতে হবে যে সাবানের মধ্যে কার্বলিক অ্যাসিড যুক্ত করা হয়েছে কিনা?

এছাড়া বিভিন্ন জীবাণুনাশক ঔষধ রয়েছে যেগুলো পোকামাকর দূর করতে ব্যবহার করা হয়। সেই ওষুধগুলোতে মূলত কার্বলিক এসিড যুক্ত করা হয়। কারণ কার্বলিক এসিডের ঝাঁজালো গন্ধের কারণে বিভিন্ন পোকামাকড় বিশেষ করে আরশোলা এবং এ জাতীয় সকল পোকামাকড় আসতে পারেনা।

বিভিন্ন পাউডার যেগুলো ময়লা এবং দুর্গন্ধ দূরীকরণের ব্যবহার করা হয়ে থাকে সেগুলোতে মূলত কার্বলিক এসিড যুক্ত করা হয়। জনগণের সচেতনার্থে কার্বলিক এসিড যুক্ত সাবান মূলত বাজারজাত করা হয় না। এজন্য এতে ভয়ের কোন কারণ নেই।

শেষ কথাঃ কার্বলিক এসিডের ক্ষতিকর দিক - কার্বলিক এসিড হাতে পড়লে করণীয় কাজ

কার্বলিক এসিডের ক্ষতিকর দিক - কার্বলিক এসিড হাতে পড়লে করণীয় কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। আজকে আমরা আপনাদের সাথে কার্বলিক এসিড হাতে পড়লে করণীয় নিয়ে আলোচনা করলাম। আশা করি আজকের আমার এই পোষ্টটি আপনাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

আজকের পোষ্টটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।