অশ্বগন্ধা মেয়েদের কত বছর বয়সে খেলে লম্বা হওয়া যায়

অশ্বগন্ধা মেয়েদের কত বছর বয়সে খেলে লম্বা হওয়া যায় ? এটি জানতে হলে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ুন। অশ্বগন্ধা মেয়েদের ১৮ বছর বয়সে খেলে লম্বা হওয়া যায় অনেকে এরকমটা বলে থাকে কিন্তু আসল ঘটনা হলো লম্বা হওয়ার পেছনে একটি হরমোন কাজ করে। যার নাম হলো টেস্টোস্টেরন হরমোন। এ টেস্টোস্টেরন হরমোন লম্বা হওয়ার কাজ থেকে শুরু করে শরীরের বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তনের জন্য কাজ করে থাকে।

টেস্টোস্টেরন হরমোনটি অনেক সময় বৃদ্ধি পায় আবার অনেক সময় হ্রাস পায়।টেস্টোস্টেরন অতিরিক্ত বৃদ্ধি কিংবা অতিরিক্ত হ্রাস শরীরের জন্য ক্ষতিকর। কারণ অতিরিক্ত বৃদ্ধি পেলে আমাদের শারীরিক ও মানসিক বিভিন্ন অস্বাভাবিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। ঠিক তেমনি যদি এই হরমোনটি হ্রাস পেয়ে যায় তখনও শরীরের নানান পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।

এজন্য টেস্টোস্টেরন নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকাই ভালো। আর এই হরমোনটি কে নিয়ন্ত্রণ করে খাদ্য এবং আমাদের বিভিন্ন ধরনের লাইফ স্টাইল। মূলত এটি খাবারের কারণেই পরিবর্তিত হয়ে থাকে। এজন্য আমাদের বয়সন্ধিকালে খুব সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে এবং পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। কারণ মানুষ প্রায় ২০ বছর পর্যন্ত বর্ধিত হতে থাকে।

এরপরে মানুষ আর লম্বা হয় না। এজন্য অশ্বগন্ধা ২০ বছরের পর সেবন করাই উত্তম। অশ্বগন্ধা মেয়েদের কত বছর বয়সে খেলে লম্বা হওয়া যায় এটির উত্তর হল অশ্বগন্ধা মেয়েদের ২০ বছর বয়সের পরে খেলে লম্বা হওয়া যায়। যেহেতু লম্বা হওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ জেনেটিক্যালি একটি পদ্ধতি। অর্থাৎ এটি বংশগত পদ্ধতি, এজন্য এতে বংশের প্রভাব রয়েছে।

যেহেতু সারাদিন একটি মানুষের বিভিন্ন রকম কাজ করতে হয় বিভিন্ন কাজের ফলে মানসিক প্রেসার তৈরি হয় যার ফলে স্ট্রেস হরমোন স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারে না। আর স্ট্রেস হরমোন স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে না পারার কারণে এটি টেস্টোস্টেরন হরমোনের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। যার ফলে আমাদের গ্রোথ হরমোন বিকাশিত হয় না।

এর কারণেই আমরা লম্বা হয় না। কিন্তু যখন অশ্বগন্ধা খাওয়া হয় তখন আমাদের জীবনধারণ পাল্টে যায়। সারাদিন কাজ করার ফলে আমাদের রাতের ঠিকমতো ঘুম হয় না, যার ফলে স্ট্রেস হরমোন ঠিকমতো কাজ করতে পারেনা। কিন্তু যখন অশ্বগন্ধ খাওয়া হয়, তখন আমাদের স্ট্রেস হরমোন ঠিক মতো কাজ করতে পারে।

যার ফলে এটি টেস্টোস্টেরন হরমোন এর ওপর প্রভাব বিস্তার করে না। যার ফলে গ্রোথ হরমোন স্বাভাবিকভাবে বিকাশিত হয়। এর কারণে আমরা লম্বা হই। যেহেতু প্রতিটি মানুষ প্রায় ২০ বছর পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে এজন্য ২০ বছর পর্যন্ত স্বাভাবিক বৃদ্ধি প্রতিহত না করার লক্ষ্যে অশ্বগন্ধা খাওয়া যাবে না। তাই বলা যাই অশ্বগন্ধা মেয়েদের ২০ বছর বয়সে খেলে লম্বা হওয়া যায়।

অশ্বগন্ধার উপকারিত বলে শেষ করা যাবে না। এর ব্যাপক উপকারী ভূমিকা রয়েছে। অশ্বগন্ধার নাম হয়তো অনেকেই শুনেছেন। এটি অনেক পুরনো একটি উদ্ভিদ। এতে প্রায় ৩৫ রকমের ফটোকেমিক্যাল রয়েছে। এতে বিভিন্ন ধরনের ঔষধি গুনাগুন বিদ্যমান। এর বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

অশ্বগন্ধার পাতা আয়ুর্বেদ চিকিৎসালয়ে ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে প্রায় প্রাচীনকাল থেকে। প্রতি ১০০ গ্রাম অশ্বগন্ধার পাউডারে বিদ্যমান পুষ্টিমান ব্যাপক। প্রতি 100 গ্রাম অশ্বগন্ধার পাউডারে এনার্জি রয়েছে ২০০ কিলোক্যালরি , কার্বোহাইড্রেট রয়েছে ৭৫ গ্রাম এবং ফাইবার রয়েছে ৭৫ গ্রাম। অশ্বগন্ধার উপকারিতা ও অপকারিতা নিচে বর্ণনা করা হলোঃ

1. ঘুমের সমস্যা দূর করে
2. সর্দি কাশি দূর করে
3. পেটের বিভিন্ন কঠিন সমস্যা দূর করতে সহায়ক
4. শরীরে শর্করার পরিমাণ কমায়
5. শক্তিবর্ধক ও গুণ বর্ধক
6. ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে
7. স্ট্রেস কমায়
8. টেস্টোস্টোরেন্ট মাত্রা ঠিক রাখে
9. গ্রোথ হরমোন বৃদ্ধি করে
10. শারীরিক সক্ষমতা বাড়ায়
11. শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেমকে বৃদ্ধি করে
12. ডায়াবেটিসের উপকারে ভূমিকা পালন করে
13. গলার থাইরয়েড
14. চোখের সমস্যা দূর করে
15. হার্টকে সুস্থ রাখে
16. ব্যাক পেইন এর সমস্যা দূর করে 
17. চুল পাকা রোধ করে
18. খুশকি কমায়
19. চুল মজবুত করে
20. চর্ম ও বাত রোগের সকল সমস্যা দূর করতে সহায়ক
21. চর্ম রোগ নির্মূল করে
22. কোষ্ঠকাঠিন্য নির্মূল করে 
23. নিরাময় করে বিভিন্ন জটিল ও কঠিন সমস্যা
24. গলগন্ড নিরাময় আজীবন গ্যারান্টি
25. সাপে কামড়ের গাছ
26. শারীরিক ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করে

অশ্বগন্ধার উপকারী ভূমিকার তুলনায় অপকারিতা খুবই নগণ্য। এর অপকারিতা নেই বললেই চলে। তবুও প্রায় প্রতিটি জিনিসেরই উপকারের পাশাপাশি অপকারিতা রয়েছে। ঠিক তেমনি অশ্বগন্ধার সামান্য অপকারিতা রয়েছে। দীর্ঘদিন অশ্বগন্ধা খেলে বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে যেমনঃ ঘন ঘন বমি ও খাবারের প্রতি আকর্ষণ না থাকা। যাদের শরীর অত্যাধিক পরিমাণ গরম থাকে তাদের জন্য অশ্বগন্ধা ব্যবহার হুমকির কারণ হতে পারে। শিশু ও গর্ভবতী নারীদের জন্য ব্যবহার করা যাবে না 

যদিও ব্যবহারের একান্ত ইচ্ছা পোষণ করে থাকে, তাহলে ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

অশ্বগন্ধার পাউডার খেলে শরীরে ব্যাপক উন্নতি সাধন হয়।

অশ্বগন্ধা পাউডারটি বর্তমান বাজারে বোতলজাত হিসাবে ক্রয় করতে পাওয়া যায়। তবে ক্রয় করার সময় আসল হলফনামা দেখে কিনতে হবে। এটি বিভিন্নভাবে খাওয়া যেতে পারে। এটি বেশিরভাগ রুটি বানানোর সময় আটার মধ্যে মিশিয়ে খাওয়া হয়। এছাড়া এক কাপ চায়ের সাথে এক থেকে দুই চামচ অশ্বগন্ধার পাউডার মিশিয়ে ভালো করে মিশ্রণ করে প্রতিদিন সকালে ও রাতে খাওয়া যেতে পারে। আবার অনেক সময় এটি মধুর সাথেও খাওয়া হয়। তবে এটি যখনই খান না কেন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাওয়াই ভালো।

অশ্বগন্ধা পাউডারের দাম বাজার অনুসারে উঠানামা করে থাকে। এজন্য সঠিক দাম বলা সম্ভব নয়। তবুও সব বাজার হিসাবে গড়দাম ধরা হয়েছে, বোতলজাত অশ্বগন্ধা পাউডার ১০০ গ্রামের দাম ১৭০ টাকা থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। আর প্যাকেটজাত এক কেজি অশ্বগন্ধা পাউডারের দাম প্রায় ২০০০ টাকা।