তিসির তেল বানানোর নিয়ম বিস্তারিত জানুন

তিসির তেল বানানোর নিয়ম

প্রথমে তিসির তেলটি গুড়ো করে নিতে হবে। আপনি ইচ্ছা করলে এটি ব্লেন্ডার মেশিন দিয়েও করতে পারেন। একটা পাত্রে জলপাইয়ের তেল অথবা নারিকেলের তেল দিয়ে চুলার উপর দিয়ে হালকা তাপ দিতে হবে। তাপ দেয়ার সময় অবশ্যই মনে রাখতে হবে কখনো উচ্চ তাপ দেওয়া যাবে না। উচ্চ পরিমাণের তাপ দিলে তেলের গুনাগুন নষ্ট হয়ে যাবে। যখন তেল ফুটন্ত অবস্থায় অর্থাৎ তেল যখন ফুটবে তখন ফুটন্ত তেলের মধ্যে তিসির তেল দিয়ে দিতে হবে ।

আরো পড়ুনঃ নার্ভের রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা - নার্ভের সমস্যা হলে কি কি হয়

তিসির তেল বানানোর প্রথম মাধ্যম হলোঃ

এরপর উপাদানগুলো ভালোভাবে মিশ্রণ করে নিতে হবে। প্রায় দশ মিনিট তাপের উপরে রাখতে হবে। এর দশ মিনিট পরে চুলা থেকে নামিয়ে একটু ঠান্ডা করে নিতে হবে। তবে অবশ্যই মনে রাখতে হবে ঠান্ডা করার জন্য ফ্রিজে রাখা যাবে না। ঠান্ডা হবার পরে ছাকনি দিয়ে ছেঁকে তেল আলাদা করে নিতে হবে। প্রস্তুতকৃত এই তেল একটি বোতলে রেখে প্রায় দুই মাস ব্যবহার করা যাবে। কারন তিসির তেল স্বাভাবিক তাপমাত্রায় দুই মাস অক্ষুন্ন অবস্থায় থাকে।

তিসির তেল বানানোর দ্বিতীয় মাধ্যম হলোঃ

একটি পাত্রে পানি নিয়ে তা চুলায় তাপ দিয়ে ফুটন্ত অবস্থায় নিতে হবে।এবার ফুটন্ত পানির মধ্যে তিসির বীজ ছেড়ে দিতে হবে। তবে অবশ্যই তাপ দেয়ার সময় মনে রাখতে হবে কখনো উচ্চ পরিমাণ তাপ দেওয়া যাবে না এতে তিসিতে বিদ্যমান গুনাগুন নষ্ট হয়ে যাবে। ততক্ষণ পর্যন্ত তাপ দিতে হবে যতক্ষণ পর্যন্ত তিসির বীজ ও পানি একেবারে মিশ্রিত হয়ে ঘন আকারে রূপ ধারণ না করে। ঘন আকার ধারণ করলে সেটি নামিয়ে কিছুক্ষণ স্বাভাবিক অবস্থায় রাখতে হবে।স্বাভাবিক তাপমাত্রায় আসলে সেটি পাতলা কাপড়ের মধ্যে নিয়ে চাপ দিয়ে তিসির বীজ ও পানির মিশ্রণ থেকে তিসির জেলিটা বের করে নিতে হবে। 

কয়েক বছর আগেও তিসির বীজ সচরাচর সব জায়গাতেই পাওয়া যেত। কিন্তু বর্তমানে এটি পাওয়া প্রায় দুঃসাধ্য। তবে বর্তমানে এটি বীজ হিসাবে খুব একটা পাওয়া যায় না গেলেও বোতলজাত হিসাবে তেল অথবা পাউডার পাওয়া যায়।এটি বিভিন্ন সুপার মার্কেটে ও কবিরাজ এর কাছে পাওয়া যায়।

তিসির তেল সংগ্রহের জন্য যোগাযোগ করুন এই নাম্বারেঃ ০১৯ ৬৭ ১৯ ৪২ ৮০ (নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা) ।

তিসির বীজ গুঁড়া-- প্রতি কেজি বোতলের মূল্য মাত্র ১৫০০ টাকা(কমবেশি করা যাবে)

শুধুমাত্র তিসির বীজ --প্রতি এক কেজির মূল্য মাত্র ৬৪০ টাকা টাকা।

আপনারা এটি প্রয়োজন অনুসারে ইচ্ছামত পরিমাপ করে নিতে পারেন। যেকোনো পরিমাপ অনুসারে এটি দেওয়া যাবে।

প্রায় আদিকাল থেকেই মানব শরীরকে সুস্থ, স্বাভাবিক ও রোগমুক্ত রাখতে তিসির বীজ ব্যবহার হয়ে আসছে। কারণ তিসির বীজের উপকারিতা পর্যাপ্ত। এতে মানব দেহের জন্য উপকারী প্রচুর পরিমাণে উপাদান রয়েছে। যা মানব দেহের ক্ষয় রোধ ও বৃদ্ধি সাধন করে। যার ফলে ছোট বড় অনেক রোগ থেকে শরীর রেহাই পায়। তিসির উপকারিতাগুলো হলোঃ

1. ওমেগা 3 ফ্যাটি এসিডের চাহিদা পূরণ করে
2. ফাইবারের চাহিদা পূরণ করে
3. কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে
4. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
5. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
6. শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে
7. সুগার নিয়ন্ত্রণ করে
8. ক্যান্সারের ঝুকি কমায়
9. ডায়াবেটিসের আক্রান্ত রোগীদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে
10. শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে

 গবেষণা ও চিকিৎসা বিজ্ঞােনের মতে, এক চামচ তিসির বীজ খেলে শরীরে প্রবেশ করে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, বিভিন্ন ওমেগা 3 ফ্যাটি অ্যাসিড,আইরন, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস। এগুলো শরীরের মধ্যে প্রবেশ করার ফলে বৃদ্ধি পায়। 

ওমেগা 3 ফ্যাটি এসিডের চাহিদা পূরণঃ

দেহের বিভিন্ন ক্ষয় বৃদ্ধি পূরণ ও বৃদ্ধি সাধনের জন্য ওমেগা 3 ফ্যাটি এসিডের তুলনা হয় না। বিশেষ করে এটি বিভিন্ন অ্যাংজাইটি ও ব্রেনের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। হার্টকে সুস্থ রাখতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। থাকে। প্রতিদিন এই তিসির বীজ সেবনের ফলে অটো ইমিউন রোগের সম্ভাবনা প্রায় ৯০% কমে যায় এবং ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি হওয়ার সম্ভাবনা কমায়। বিশেষ করে কোলন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৫০ শতাংশ কমিয়ে দেয় এই তিসির বীজ।

কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণঃ

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণঃ

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ 

শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণঃ

সুগার নিয়ন্ত্রণঃ

তিসির অপকারিতাঃ

চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে প্রতিদিন ৫ চা চামচ বা ৫০ গ্রামের কম তিসির বীজ খেতে হবে। তিসির বীজ অবশ্যই শরীরের জন্য উপকারী সেটি যদি মাত্রা অনুসারে খাওয়া হয়। কিন্তু সেটা যদি মাত্রার অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া হয় তাহলে উপকারের পরিবর্তে অপকার হতে পারে। যেমনঃ তিসির বীজ পেটের বিভিন্ন সমস্যা ও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে। 

কিন্তু এটি যদি মাত্রার অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া হয় তাহলে ডায়রিয়া হতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার পরিবর্তে কোষ্ঠকাঠিন্যতাকে আরো বৃদ্ধি করে দিতে পারে । এটি ব্লাড প্রেসার এর পরিমাণ স্বাভাবিক রাখে কিন্তু এটি যদি পরিমাণের অতিরিক্ত খাওয়া হয় তাহলে ব্লাড প্রেসার কে অতিরিক্ত নিচে নামিয়ে আনে ফলে লো ব্লাড প্রেসার রিঅ্যাকশন হতে পারে। এছাড়া তলপেটে ব্যথা, মাথা ঘোরানো ও একাধিকবার বমি হতে পারে।

যদি তিসি দিয়ে রূপচর্চা করা হয়, তাহলে এটি যে কোন স্ক্রিনের জন্য ভাল রকম উপকার দিবে। এটি ড্রাই স্কিন, অয়েল স্কিন, সেনসেটিভ স্কিন ও যেকোন স্কিন এর জন্য ব্যাপক উপকার সাধন করে। স্বাভাবিকভাবে দেখা যায় একটু বয়স হলে আমাদের ত্বকে বয়সের ছাপ বসে যায় অর্থাৎ ত্বকের উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়ে যায়। যার ফলে বয়স্ক লাগে। হয়তো বয়স ৩০ বছর কিন্তু দেখে মনে হয় বয়স ৪০ বা ৪৫ বছর। 

আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় বয়স ৪০ বা ৪৫ বছর অথচ তাদের দেখে মনে হয় তাদের বয়স ৩০ বছর। কারণ তাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা এখনো বিদ্যমান।তিসির তৈরি এই জেলটি দিনে ২ বার ব্যবহার করতে হবে। দুইবার অর্থাৎ ঘুম থেকে উঠে ও রাত্রে শোবার পূর্বে ব্যবহার করতে হবে। ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই মুখটি ফেসওয়াশ দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। পরিষ্কার করে হালকা শুকিয়ে নিয়ে ব্যবহার করতে হবে।

৪ চামচ তিসির বীজ ও ১ কাপ পানি একটি পাত্রে দিয়ে পাত্রটিকে চুলায় তাপ দিতে হবে। এতে হালকা তাপ প্রদান করে ২ বার ফুটিয়ে নিতে হবে। ফুটানোর সময় অবশ্যই মনে রাখতে হবে অতিরিক্ত তাপ প্রদান করা যাবে না। অতিরিক্ত তাপ প্রদান করলে এর গুনাগুন নষ্ট হয়ে যাবে। ততক্ষণ পর্যন্ত তাপ দিতে হবে যতক্ষণ পর্যন্ত তিসির বীজ ও পানি একেবারে মিশ্রিত হয়ে ঘন আকারে রূপ ধারণ না করে। একটি পাতলা কাপড়ের মধ্যে ঘন মিশ্রণকে রেখে চাপ দিয়ে কাঙ্খিত জেলটি পরিশোধন করে নিতে হবে।

আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় অ্যালজিন ট্যাবলেট খাওয়া যাবে কি । Algin ট্যাবলেট এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

 মোটামুটি ৪ চামচ পরিমাণ তিসির জেল পাওয়া যাবে। এবার এই জেলের মধ্যে ৩ চামচ এলোভেরা তেল ও ১ চামচ বাদাম তেল দিয়ে ভালোভাবে মিশ্রণ করতে হবে। যদি বাদাম তেল না থাকে সেক্ষেত্রে নারিকেল তেল দিলেও হবে। এরপর এরমধ্যে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ১ পিস দিতে হবে। যাদের ভিটামিন ই ক্যাপসুল এ এলার্জি আছে তাদের এটি না দেওয়াই ভালো। এরপরে প্রায় পাঁচ মিনিট ধরে এটি ভালোভাবে মিশ্রণ করে একটি পরিষ্কার বোতলে সংরক্ষণ করতে হবে।বোতলে সংরক্ষণের ফলে এটি প্রায় দুই মাস ব্যবহার করা যাবে। 

এই জেলটি তৈরীর জন্য আপনাদের একটি পাত্রে পানি নিয়ে তা চুলায় তাপ দিয়ে ফুটন্ত অবস্থায় নিতে হবে।এবার ফুটন্ত পানির মধ্যে তিসির বীজ ছেড়ে দিতে হবে। তবে অবশ্যই তাপ দেয়ার সময় মনে রাখতে হবে কখনো উচ্চ পরিমাণ তাপ দেওয়া যাবে না। এতে তিসিতে বিদ্যমান গুনাগুন নষ্ট হয়ে যাবে। ততক্ষণ পর্যন্ত তাপ দিতে হবে যতক্ষণ পর্যন্ত তিসির বীজ ও পানি একেবারে মিশ্রিত হয়ে ঘন আকারে রূপ ধারণ না করে। ঘন আকার ধারণ করলে সেটি নামিয়ে কিছুক্ষণ স্বাভাবিক অবস্থায় রাখতে হবে।স্বাভাবিক তাপমাত্রায় আসলে সেটি পাতলা কাপড়ের মধ্যে নিয়ে চাপ দিয়ে তিসির বীজ ও পানির মিশ্রণ থেকে তিসির জেলিটা বের করে নিতে হবে। 

•  চুলকে সোজা রাখতে সাহায্য করবে 
• কন্ডিশনারের কাজ করবে 
• চুলের রুক্ষতা দূর করবে
•  চুলের আগা-গোড়া ফাটা দূর করবে
• চুল ময়েশ্চারাইজ করবে

প্রথমে চুল ভালোভাবে শ্যাম্পু করে নিতে হবে। শ্যাম্পু করে চুল হালকা শুকিয়ে নিতে হবে তবে রোদে শুকালে ভালো হয়। শুকানোর পরে এই জেলটি হালকা হাতে নিয়ে এর সাথে একটু পানি মিশিয়ে আলতো করে চুলের গোড়া থেকে আগে পর্যন্ত মাখিয়ে নিতে হবে। মাখানোর পরে আধাঘন্টা রেখে দিতে হবে। 

আরো পড়ুনঃ হামদর্দ সাফি সিরাপ খেলে কি ওজন কমে

আধা ঘন্টা রেখে দেওয়ার পরে যখন জেলটি শুকিয়ে আসবে তখন পানি দিয়ে হালকা ধুয়ে এরপরে শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে ঘষে জেলগুলো তুলে দিতে হবে। এরপর আবার হালকা শুকিয়ে নিয়ে চুলে অলিভ অয়েল মাখাতে হবে। এই পদ্ধতি অবলম্বন করলে চুলের যত সমস্যা আছে প্রায় সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। বিশেষ করে চুল আঁকাবাঁকা, চুল পড়া ও চুল পাকার সমস্যা।