পায়ের নখের কুনি দূর করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত

 

১৫ মিনিট পা চুপিয়ে রাখার পর যখন পায়ের নখগুলো নরম হয়ে যাবে, তখন একটি সুতা দিয়ে পায়ের নখের ভিতরে ঢুকিয়ে আস্তে আস্তে ময়লাগুলো পরিষ্কার করতে হবে। তবে খুব বেশি ভিতরের দিকে দেওয়া যাবে না। যার ফলে আবার রক্তপাত হতে পারে এবং খেয়াল রাখতে হবে, আপনি যেই সুতা দিয়ে নখ পরিষ্কার করছেন সেটি যেন অবশ্যই জীবাণুমুক্ত হয়। জীবাণুমুক্ত করতে আপনি সুতোটিকে ডেটল দিয়ে ধুয়ে নিতে পারে।

 

জুতা বা স্যান্ডেল ব্যবহারের সময় খেয়াল রাখতে হবে সেটি যেন খুব বেশি চিপা না হয়। জুতো স্যান্ডেল ব্যবহারের পূর্বে পায়ের নখে ব্যান্ডেজ করে নিলে ভালো হয়।

অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল বিভিন্ন ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু যদি সেখানে ইনফেকশন হয়ে যায় অতিরিক্ত বেশি, তাহলে বাসায় ট্রিটমেন্ট না করে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া ভালো। কারণ অনেক ডায়াবেটিস রোগীরা আছে যাদের জন্য এই ইনফেকশন মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।

পায়ের নখের কুনি দূর করার ঔষধগুলো হলোঃ

1) APIS MELLFICA 30

এই ঔষধটি দিনে ৪ থেকে ৫ বার ব্যবহার করতে হবে। ২ থেকে ৩ দিন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ১-১.৫০ দিনের মধ্যেই এটি নখের কুনি ভালো করতে সক্ষম। এটি ব্যবহারের ফলে নখে যদি পুঁজ বা রক্ত জমে সেটি নিমিষেই ফেটে যায়। ফেটে গিয়ে আপনি এই রোগ থেকে পরিত্রাণ পাবেন। এটি সাধারণত ডান হাত ও ডান পায়ে বেশি ভালো কাজ করে যদি আঙ্গুলের মাথা লাল টকটকে হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে এই ওষুধটি সর্বাধিক কাজ করে থাকে।

2) HEPAR SULPHUSRIS 6

এটি পেশেন্টটি রোগের জন্য অত্যাধিক কার্যকর। এই ওষুধটি দিনে ৫ থেকে ৬ বার, খুব বেশি দরকার হলে সর্বোচ্চ ৮ বার ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি সর্বোচ্চ দেড় দিনের মধ্যেই নখের কুনি দূর করতে সাহায্য করে।

3) MYRISTICA 30

এর মত অ্যান্টিসেপটিক পাওয়ার খুব কম ওষুধের মধ্যেই আছে।এটি এই দিনে বেশিবার ব্যবহার করা লাগেনা। প্রয়োজন অনুসারে একবার দিলেই অনেকক্ষ কাজ করে। এটি এক দিনেই অনেকটা অংশ নির্মল করতে সক্ষ।

4) HYPERICUM 30

এটি মলম নয়, এটি সেবন করতে হয় । এটি মলম এর পাশাপাশি সেবন করতে হয় । পায়ের নখকুনিতে যাদের তীব্র যন্ত্রণা হয় তারা যদি দিনে 5 থেকে 6 বার সেবন করেন তাহলে আশা করা যায়,নখের কুনির সমস্যা থেকে চিরতরে মুক্তি পাবে।

5) GUN POWDER 3X

 

নখের কুনি দূর করার এই ওষুধটির কথা না বললেই নয়।

এটি বাজারে ট্যাবলেট হিসেবে পাওয়া যায়। এটি অর্ধেক কাপ গরম পানির মধ্যে দিয়ে দিনে ৫ থেকে ৬ বার যদি খাওয়া যায় তাহলে ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যেই নখের কুনি দূর করতে সর্বাধিক সাহায্য করবে। পুঁজ বেরিয়ে যাবে। এটি রক্ত সঞ্চালনের সাহায্য করে এবং রক্ত শরীর থেকে বেরিয়ে আসতে বাধা প্রদান কর 

পায়ের আঙ্গুলের নখের সমস্যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো নখের ছত্রাকের সমস্যা। মানবদেহে যত ছত্রাকের সমস্যা রয়েছে তার মধ্যে একটি সাধারণ সমস্যা হলো পায়ের আঙ্গুলের নখের সমস্যা। পায়ের আঙ্গুলের নখের সমস্যা হয়েছে কিনা এটি ১০০% সিউর হওয়ার জন্য আপনারা দেখবেন যে,নখের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত বিকৃত আকার ধারণ করেছে কি না?

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় নখের রং হলুদ হয়ে গেছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় নখের রং হলুদের পাশাপাশি হালকা একটু সাদাটে হয়। যদি এই সমস্যা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে তাহলে শেষ পর্যায়ে দেখা যায় নকটি ভেঙে যায়। যার ফলে সম্পূর্ণ নখটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। পায়ের আঙ্গুলের নখের আরেকটি সমস্যা দেখা যায়, যেটি নখের আশেপাশে যে ত্বকটি আছে সেখানে ইনফেকশন হয়।

যার ফলে এই ত্বকটি লাল হয়ে যায় কিংবা ফুলে যায়। যার ফলে অসহ্যকর যন্ত্রণায় ভুগতে হয়।আবার সেখানে পুঁজ জমার কারণে আমাদের স্বাভাবিক জীবন যাপনে বাধা সৃষ্টি করে।এর পাশাপাশি আরো কিছু নখের সমস্যা দেখা দেয়। পায়ের আঙ্গুলের নখের সমস্যা হয় ভিটামিন বা জিংক এর অভাবে। এটি পুষ্টি জনিত সমস্যার অন্তর্গত।

পায়ের আঙ্গুলের নখের সমস্যা মধ্যে একটি হলো নখের একপাশে ফোলা ও ব্যাথার সমস্যা। এটি পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলের নখে বেশি হয়। পায়ের আঙ্গুলের নখের সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের নখটাকে সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে। কেটে ছোট করে রাখতে হবে যাতে নখের চারিদিকে কোন ময়লা আবর্জনা না ঢুকে।

সবচেয়ে খেয়াল রাখতে হবে গোসলের পরে ও পা ধোয়ার পরে নখের চারপাশে যেন পানি জমে না থাকে। এগুলো শুকিয়ে ফেলতে হবে কিংবা কাপড় দিয়ে মুছে ফেলতে হবে। আর ডায়াবেটিসের রোগীদের এই বিষয়ে সর্বোচ্চ সচেতনতা বাড়াতে হবে। পরিশেষে বলা যায় যদি নখ সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা যায় তাহলে এই সমস্যা থেকে চিরতরে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এজন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় যেসব নারী পরিবারগত কারণে নিয়মিত পানি বা রাসায়নিক কেমিক্যাল এর সংস্পর্শে আসে কিংবা যাদের হাত অধিকাংশ সময় ভেজা অবস্থায় থাকে তারা এই রোগে বেশি ভুগে থাকে। আরো বেশ কিছু কারণে নখের গোড়া ফুলে যেতে পারে,যেমনঃ হাত-পায়ের নখ যদি আঘাতের সম্মুখীন হয়, নখ যদি আদ্র অবস্থায় থাকে ইত্যাদি। আবার যেসব বাচ্চারা মুখে বেশিরভাগ সময় আঙ্গুল দিয়ে রাখেন তাদেরও এই সমস্যা হতে পারে।

যেসব ডাইবেটিস রোগীদের রক্তে চিনির মাত্রা অনিয়ন্ত্রিত অবস্থায় থাকে তাদেরও এ রোগ হতে পার। সিরিয়াসিস ও অন্যান্য ধরনের নখের রোগের নাম প্যারোনাইকি‌য়া। এসব ক্ষেত্রে বেশিরভাগ দেখা যায় এগুলো নখের ত্বকে ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাস আক্রান্ত হয়েছে। ফলে নখের পাশের ত্বক ফুলে ওঠে এবং প্রচন্ড যন্ত্রণা অনুভব হয়। যাকে প্যারোনাইকি‌য়া বলে।

প্যারোনাইকি‌য়া দুই ধরনের হয়ে থাকেঃ

একিউর প্যারোনাইকি‌য়া **

এমন হয় যে কয়েকদিনের মধ্যেই নখ ফুলে গিয়ে প্রচন্ড ব্যথা অনুভূত হয় তাহলে এটি একিউট প্যারোনাইকি‌য়া।

ক্রনিক প্যারোনাইকি‌য়া**

আর যদি বিষয়টি এমন হয় যে, দীর্ঘদিন ব্যাথা কিন্তু ব্যথা তুলনামূলক কম। আবার নখগুলো শক্ত হয়ে যায় তবে এটি ক্রনিক প্যারোনাইকি‌য়া।

একিউট প্যারোনাইকি‌য়া ক্ষেত্রে যদি নখের ত্বকের দুই পাশে পুঁজ জমে তাহলে সেটি ড্রেন করে বের করে দিতে হবে। যদি এটি করা না হয় তাহলে এমনও হতে পারে সেই নখটি কেটে ফেলতে হতে পারে। তাই নখের অবস্থান ঠিক রাখার জন্য এটি যথাযথভাবে ড্রেন করে বের করে ফেলতে হবে এবং এন্টিবায়োটিক ওষুধ ব্যবহার করতে হবে।

আর যদি ফাংগাল ইনফেকশন হয় তাহলে এন্টিফাঙ্গাল ঔষধ প্রয়োগ করতে হবে। কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে যেমনঃ নখ কেটে ছোট রাখতে হবে, দীর্ঘ সময় রাসায়নিক কেমিক্যালে অথবা পানিতে হাত-পা ভিজিয়ে রাখা যাবে না,ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তের সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। পরিশেষে বলা যায় গুরুত্বসহকারে পরিচর্যা করতে হবে।

 

এটি নখের ৩ পাশে ২ ফোঁটা করে দিনে ২ ব্যবহার করতে হবে। যতদিন পর্যন্ত আপনার লক্ষণই ভালো না হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত এই মলমটি ব্যবহার করতে হবে। এটি মূলত ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাক নাশকারী মলম। এটি আপনি অন্যান্য কাজেও ব্যবহার করতে পারেন।

পায়ের নখের কুনি দূর করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। আজকে আমরা আপনাদের সাথে নখের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা করলাম। আশা করি আজকের আমার এই পোষ্টটি আপনাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আজকের পোষ্টটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।