রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির ইনজেকশন । হিমোগ্লোবিন সিরাপ এর নাম

প্রিয় পাঠক, রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির ইনজেকশন সম্পর্কে আপনি কি বিস্তারিত জানতে চান? তাহলে আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্য। কারণ আজকের এই পোস্টে আমরা এই সম্পর্কে সকল তথ্য বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। যার মাধ্যমে আপনি আপনার মনের প্রশ্নের সকল উত্তর সহজেই জানতে পারবেন যদি আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়েন।

আমাদের শরীরে যে রক্ত থাকে তা মূলত তিনটি অংশে বিভক্ত করা হয়। সেই তিনটি অংশ হল লোহিত রক্ত কণিকা, শ্বেত রক্তকণিকা ও অনুচক্রিকা। আমাদের শরীরের সবথেকে বেশি পরিমাণে থাকে লোহিত রক্তকণিকা। রক্ত কণিকার রং লাল হয়। আর এই লাল হওয়ার পেছনে হিমোগ্লোবিন নামক একটি প্রোটিন কাজ করে থাকে। অর্থাৎ হিমোগ্লোবিন এর কারণে রক্ত লাল দেখায়।

আমাদের আগে জানতে হবে হিমোগ্লোবিন কি? মানবদেহে হিমোগ্লোবিনের প্রয়োজনীয়তা কি? হিমোগ্লোবিন ছাড়া কি মানুষ বাঁচতে পারে না? তো চলুন জেনে নেওয়া যাক এই প্রশ্নের উত্তরগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত। এগুলো জানার পরে আমরা জানবো রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির ইনজেকশন সম্পর্কে সকল তথ্য। তো চলুন প্রথম পয়েন্ট নিয়ে আগে আলোচনা করা যায়।

আমাদের রক্ত লাল দেখানোর পিছনে প্রধান কারণ হলো হিমোগ্লোবিন। সহজ কথায় বলতে গেলে আমাদের রক্ত লাল দেখানোর পিছনে হিমোগ্লোবিন দায়ী। আমাদের রক্তের সাধারণত তিন ধরনের থাকে। তার মধ্যে সবথেকে বেশি থাকে লোহিত রক্তকণিকা। এ লোহিত রক্তকণিকার মধ্যে হিমোগ্লোবিন থাকে। আর লোহিত রক্তকণিকা আমাদের হাড়ের লাল অস্থিমজ্জা থেকে উৎপন্ন হয়।

আমরা সবাই জানি রক্তের মাধ্যমে আমাদের শরীরে অক্সিজেন গ্রহণ এবং কার্বন ডাই অক্সাইড ত্যাগ করা হয়। আমাদের শরীরে সর্বোত্ত অঙ্গে রক্ত পরিবাহিত হয়। আমাদের রক্তে থাকা এই হিমোগ্লোবিন ফুসফুস থেকে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত আমাদের সমস্ত শরীরে পরিবাহিত করে। রক্ত যদি হিমোগ্লোবি না থাকে তাহলে রক্তের মাধ্যমে অক্সিজেন পরিবহনের ক্ষমতা ৭০ গুণ কমে যায়।

হিমোগ্লোবিনের প্রধান এবং প্রথম কাজ হল আমাদের শরীরে অক্সিজেন পরিবহন করা। কিন্তু আমাদের শরীরে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে হিমোগ্লোবি না থাকে তাহলে আমাদের শরীরে ঠিকমতো অক্সিজেন পরিবাহিত হয় না। যার ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয় যেমনঃ দুর্বলতা, শ্বাসকষ্ট, সারা শরীরে ব্যথা, ত্বক ফ্যাকাশে হওয়া, ক্লান্তি, চোখের সামনে অন্ধকার দেখা ইত্যাদি।

এজন্য আমাদের শরীরে ঠিকমতো অক্সিজেন পরিবহনের জন্য এবং আমাদের শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য রক্তে হিমোগ্লোবিনের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। আমাদের রক্তে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে হিমোগ্লোবিন না থাকে তাহলে তাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় তাকে অ্যানিমিয়া বলা হয়। একটি গবেষণায় দেখা গেছে এনিমিয়া বিভিন্ন ধরনের হতে পারে।

আপনার শরীরে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন না থাকে তাহলে আপনার এনিমি হতে পারে। কারণ হিমোগ্লোবিনের যেসব উপাদান রয়েছে তার মধ্যে আয়রন অন্যতম। এছাড়া লোহিত রক্ত কণিকার অতিরিক্ত ক্ষয় হতে থাকে তাহলে লোহিত রক্ত কণিকার ক্ষয় এর কারণেও এরমিয়া হতে পারে। এছাড়া লোহিত রক্ত কণিকার উপাদানের ঘাটতি হলে লোহিত রক্ত কণিকার উৎপাদনের ব্যাঘাত ঘটে ফলে অ্যানিমিয়া হয়।

যখন কোন ব্যক্তির রক্ত হিমোগ্লোবিনের সংকট দেখা দেয় তখন রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা গ্রহণের পরামর্শ দেয় অভিজ্ঞ চিকিৎসকগণ। রক্তিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির চিকিৎসার মধ্যে অন্যতম হলো ঔষধ সেবন, ইনজেকশন গ্রহণ এবং নিয়ম অনুসারে জীবন যাপন করা। চিকিৎসক রোগের শারীরিক অবস্থা অনুসারে চিকিৎসা গ্রহণের নির্দেশনা দেন।

আপনার যদি আয়রন জনিত কারণে রক্তে হিমোগ্লোবিনের সংকট হয় তাহলে আয়রন সম্পূরক বিভিন্ন চিকিৎসা যেমনঃ ট্যাবলেট, ক্যাপসুল, ইনজেকশন বা বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ প্রদান করে থাকে। তবে যেহেতু এটি রক্তের সমস্যা এজন্য এই সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে দীর্ঘ মেয়াদি চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করতে হয়।

আয়রন এর ঘাটতির কারণে রক্তে হিমোগ্লোবিন এর উৎপাদনে সমস্যা হয়। আপনার যদি রক্ত আয়রন এর ঘাটে থাকে তাহলে এনিমিয়া হয় কারণ হিমোগ্লোবিনের একটি অপরিহার্য উপাদান হলো আয়রন। এই আয়রনের ইনজেকশন রোগীর শারীরিক অবস্থা অনুসারে সপ্তাহে এক থেকে দুইবার গ্রহণের নির্দেশনা দিয়ে থাকি অভিজ্ঞ চিকিৎসা করে।

আপনার যদি রক্তের হিমোগ্লোবিনে সিন্থেসিসের ঘাটতি থাকে তাহলে অভিজ্ঞ চিকিৎসকগণ আপনার এই সিনথেসিসের ঘাটতি জনিত কারণে রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির ইনজেকশন সপ্তাহে ১ থেকে ২ বার দেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে থাকেন অভিজ্ঞ চিকিৎসকেরা। কিন্তু ভুলেও এই ইনজেকশন চিকিৎসকের নির্দেশনা ব্যতীত নেওয়া যাবে না কারণ এই ইনজেকশনে বেশ কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে।

রক্ত হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির ইনজেকশন এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো হলঃ শ্বাসকষ্ট, জ্বর, পেট ফাঁপা, রক্তচাপ কমে যাওয়া, বমি বমি ভাব, অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া, ঠিক মতো ঘুম না হওয়া ইত্যাদি। এজন্য আপনারা কখনোই এই ইনজেকশনগুলো একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের নির্দেশনা ব্যতীত কখনো গ্রহণ করবেন না। চিকিৎসকের নির্দেশনা ব্যতীত এটি নিলে ভবিষ্যতে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশের সৃষ্টি হতে পারে।

রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর জন্য ইনজেকশনের খরচ ইনজেকশনের ধরন, ডোজ এবং কোম্পানির উপর ভিত্তি করে। নিচে ধরন অনুসারে রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির ইনজেকশন এর দাম উল্লেখ করা হলঃ

আয়রন ইনজেকশনের খরচ দাম

আয়রন ডি-সালফেট ইনজেকশনের ১০০ মিলিগ্রামের দাম প্রায় ১০০ - ১৫০ টাকা।

ইনজেকশনযুক্ত ফেরাস গ্লুকোনেটঃ ১০০ মিলিগ্রামের দাম প্রায় ১৫০ - ২০০ টাকা।

ফেরাস কার্বনেটের ইনজেকশনের ১০০ মিলিগ্রামের দাম প্রায় ১০০ - ১২০ টাকা।

ভিটামিন বা মিনারেল ইনজেকশনের দাম

ভিটামিন বি 12 ইনজেকশনের ১০০ মিলিগ্রামের ডোজ এর দাম প্রায় ১৫০ - ২০০ টাকা

ফলিক অ্যাসিড ইনজেশনের দাম প্রায় ১০০ - ১২০ টাকা।

ক্যালসিয়াম ইনজেকশনের দাম প্রায় ১৫০ - ২০০ টাকা।

রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির যে চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম চিকিৎসা পদ্ধতি হলো হিমোগ্লোবিন সিরাপ সেবন করা। অন্যান্য যে চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে যেমনঃ ট্যাবলেট খাওয়া, ইনজেকশন গ্রহণ করার ইত্যাদ। এসব চিকিৎসার মধ্যে সবথেকে সহজ এবং সহজলভ্য চিকিৎসা হলো সিরাপ এবং করা।

আপনাদের সুবিধার্থে বাংলাদেশের অতি জনপ্রিয় এবং অভিজ্ঞ চিকিৎসক করতে নির্দেশিত বহুল ব্যবহৃত হিমোগ্লোবিন সিরাপ এর নাম নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ

হিমোগ্লোবিন বাড়ে কোন মাছে

ব্যক্তিগত পরামর্শ