ল্যাকটোজেন 1 এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

Siam 😎

28 Dec, 2023

প্রিয় পাঠক, আপনি কি ল্যাকটোজেন 1 এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান? তাহলে আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্য। কারণ আজকের এই পোস্টে আমরা এই সম্পর্কে সকল তথ্য বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। যার মাধ্যমে আপনি আপনার মনের প্রশ্নের সকল উত্তর সহজেই জানতে পারবেন যদি আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন

আজকের এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়লে আপনি জানতে পারবেন ল্যাকটোজেন 1 এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য। যাদের এই তথ্য জানার বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে তারা চাইলে এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার মাধ্যমে আপনি আপনার কাঙ্খিত তথ্য পেতে পারেন।

ল্যাকটোজেন কি

ল্যাকটোজেন হলো মূলত গ্যালাকটোজ এবং গ্লুকোজ এর সমন্বয় তৈরি একটি দুগ্ধজাত পণ্য। এজন্য ল্যাকটোজেনকে ডাইস্যাকারাইড বলা হয়। এটি মূলত প্রধান শর্করা হিসেবে ভূমিকা পালন করে দুধ এবং দুগ্ধ জাতীয় খাবারের। এটির মাধ্যমে বোঝা যায়, ল্যাকটোজেন হলো শিশুদের জন্য একটি পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার।

আরো পড়ুনঃ মৃগী রোগের ঔষধের নাম । মৃগী রোগের ইসলামি চিকিৎসা a to z

নবজাতক শিশুদের জন্য প্রধান খাদ্য হল দুধ আর ল্যাকটোজেন হল দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবারের প্রধান উৎস। এটি খাওয়ানের ফলে শিশুদের শরীরে প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টি উপদান সরবরাহ করে। এমনকি এটি শিশুদের স্নায়ুবিক কার্যক্রম পরিচালনা , মস্তিষ্কের বিকাশ ও বৃদ্ধিসহ হরমোনের সঠিক প্রয়োগ নিয়ন্ত্রন করতে সক্ষম।

ল্যাকটোজেন কি কাজে লাগে

দুধের বিভিন্ন প্রধান উপাদান যেমনঃ প্রোটিন, ল্যাকটোজ, খনিজ পদার্থ, ভিটামিন ও কার্বোহাইড্রেট। শিশুর দেহের বৃদ্ধি এবং বিকাশের জন্য অন্যতম প্রধান উপদান হল প্রোটিন। ভিটামিন ও বিভিন্ন খনিজ পদার্থ শিশুর শারীরিক সকল কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অপরিহার্য। কার্বহাইড্রেট শরীরে জ্বালানি হিসাবে কাজ করে। ফ্যাট শিশুদেহে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রনে ভূমিকা রাখে।

বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশে শিশুদের জন্মের পরে অনেক কারণেই ল্যাকটোজেন খাওয়ানো হয়ে থাকে। অনেকে মনে করে ল্যকটোজেন খাওয়ালে শিশুদের শরীরের অনেক উপকার করে থাকে। আসলে ঘটনা সত্য কারণ ল্যাকটোজেনের মধ্যে এমন অনেক উপদান রয়েছে যা শিশুর অনেক উপকার করে।

ল্যাকটোজেন এর উপদান

গ্লুকোজঃ ল্যকটোজেন এর উপদানের মধ্যে ৫০% রয়েছে গ্লুকোজ। গ্লুকোজ আমদের শরীরের জন্য বিশেষ উপকারি উপদান। গ্লুকোজ আমাদের শরীরের শক্তি উৎপাদনের প্রধান উৎস কারণ এটি সরল শর্করা।

গ্যালাকটোকঃ ল্যাকটোজেনের বাঁকি ৫০% উপাদান গ্যালাকটোজ দিয়ে তৈরী। গ্লুকোজের মতো গ্যালাকটোজও আমাদের শরীরের অনেক উপকার করে থাকে। গ্যালকটোক আমাদের শরীরের কোষের কোষ ঝিল্লি এবং নিউরনের বিকাশের কাজ করে কারণ এটি একটি সরল শর্করা।

ল্যাকটোজ (এতে আছে মিল্ক)

স্কিম মিল্ক ড্রাইভ ১৬.০৪% (এতে আছে ল্যাকটোজ)

হাই অলিক সানফ্লাওয়ার অয়েল

হোয়ে পাউডার (এতে আছে মিল্ক)

লো ইরোসিস এসিড রেপসিড অয়েল

সয়া লেসিথিন 322i (এতে আছে সয়াবিন)

প্রোবায়োটিক কালচার লিমোসিল্যাকটোব্যাসিলাস রিউটেরি ০.০৩৭৪%

এসিডিটি রেগুলেটর ৩৩০

এল-কারনিটিন এবং ভিটামিন্স ও মিনারেল্স।

ক্যারিয়ার গ্লুকোজ সিরাপ এবং ম্যালটোডেক্সট্রিন)

সানফ্লাওয়ার অয়েল

কলিন

আ্যান্টিঅক্সিডেন্ট (৩০৭ এবং ৩০৪)

কোকোনাট অয়েল

টরিন

ল্যাকটোজেন এর সকল উপদান সৃষ্টিকর্তা মাতৃদুগ্ধে দিয়েছেন। যার ফলে শিশুরা যদি মাতৃদুগ্ধ পান করে তাহলে আর আলাদাভাবে ল্যাকটোজেন খাওয়ার প্রয়োজন নেই। কিন্তু অনেক সময় বিভিন্ন সমস্যার কারণে শিশুরা মাতৃদুগ্ধ খেতে পায় না যার ফলে বাহিরে থেকে ল্যাকটোজেন খাওয়ানো হয়। এটি সাধারণত ৩ বছর বয়স পর্যন্ত সেবনের নির্দেশনা দেওয়া হয়।

ল্যাকটোজেন এর বিকল্প খাবার

আপনাদের অনেকের কাছে ল্যাকটোজেন এর দাম বেশি মনে হতে পারে বা ল্যাকটোজেন কেনার সামর্থ না থাকতে পারে। ল্যাকটোজেন কৃত্রিম দুধ শিশুদের খাওয়াতেই হবে বিষয়টা এমন না। আপনাদের যারা এটি কিনতে চান না বা কেনার সামর্থ নেই তারা চাইলে ল্যাকটোজেন এর বিকল্প হিসাবে শিশুদের ল্যাকটোজেন এর পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ দুগ্ধজাত খাবারগুলো খাওয়াতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ বাচ্চাদের টোফেন সিরাপ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া২২

শিশুদের নিম্নোক্ত খাবারগুলো খাওয়ালে মোটামুটি প্রায় সকল পুষ্টি চাহিদাগুলো পূরণ হয়ে যায়। তাই আপনারা যারা ল্যাকটোজেন কিনতে অক্ষম তারা অবশ্যই নিম্নের খাবারগুলো শিশুদের খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন। তাহলে আপনার শিশু আর অপুষ্টিতে ভুগবে না। শিশুদের ল্যাকটোজেন এর পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ দুগ্ধজাত খাবারগুলো হলঃ

খাঁটি দুধ
আসল দই
ছানা
মাখন
পনির
মালাই
ঘোল
ক্রিম

শিশুদের জন্য ল্যাকটোজেন ব্যাবহারের নিয়ম

ল্যাকটোজেন ব্যাবহারের পূর্বে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরার্মশ গ্রহন করুন।
ল্যাকটোজেন ক্রয়ের সময় প্যাকেটের তারিখ এবং নির্দেশনা ভালোভাবে পড়ুন।
ল্যাকটোজেন ব্যাবহারের পূর্বে পাত্রটি ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
ল্যাকটোজেন ব্যাবহারের সময় নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি মিশিয়ে নিন।
ল্যাকটোজেন ব্যাবহারের পর পাত্রটি ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার অবস্থায় রাখুন।
ল্যাকটোজেন ঠান্ডা স্থানে রাখুন।

ল্যাকটোজেন 1 বানানোর নিয়ম

ল্যাকটোজেন 1 বানানোর নিয়ম হল ল্যাকটোজেন বানানোর আগে আপনাকে অবশ্যই পরিষ্কারক দ্রব্য দিয়ে পাত্র ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। যে পাত্রে আপনি তৈরি করবেন সেই পাত্রটি কমপক্ষে গরম পানিতে ৫ মিনিট ফুটিয়ে নিতে হবে। এরপরে সাধারণ পানি ৫ মিনিট ফুটিয়ে নিতে হবে। ল্যাকটোজেন বানানোর জন্য যে দাগকাটা ঢাকনাযুক্ত পাত্র রয়েছে তাতে নির্দিষ্ট পরিমাণ হালকা গরম পানি নিন।

প্যাকেটের নির্দেশিত ল্যাকটোজেন 1 বানানোর নিয়ম এর বয়স অনুসারে ল্যাকটোজেন পাউডার গরম পানির মধ্যে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। ভালোভাবে মেশানোর পরে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দ্রুত খাওয়ান। লেকটোজেন এর প্যাকেটটি ভেজা বা আদ্র অবস্থানে রাখবেন না। নতুন প্যাকেট খোলার তিন সপ্তাহের মধ্যে এটি খাওয়ানো শেষ করুন।

ল্যাকটোজেন ১ খাওয়ার নিয়ম

ল্যাকটোজেন এক হলো শিশুদের জন্য একটি পুষ্টি সমৃদ্ধ সাপ্লিমেন্ট। এজন্য এর মধ্যে অনেক উপাদান রয়েছে যেটি শিশুর শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধির জন্য ব্যাপক সাহায্য করে থাকে। কিন্তু এটি নির্দেশিত নিয়ম ব্যতীত অনিয়মে খাওয়ানোর ফলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের মারাত্মক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য এটি সঠিক নিয়মে শিশুদের খাওয়াতে হবে। যার ফলে কোন ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হবে না।

আরো পড়ুনঃ ভেরিকোসিল হলে কি বাচ্চা হবে না । ভেরিকোসিল সারতে কতদিন লাগে

একটি পরিষ্কার বোতন নিন। এরপর এতে মোটামুটি ১৫০ মিলিগ্রাম গরম পানি নিন। নির্দেশিত পরিমাণ অনুযায়ী ল্যাকটোজেন ১ পউডার পানিতে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এরপর শিশুকে খাওয়ান। এখানে অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে চিকিৎসক নির্দেশিত বয়স অনুসারে যে পরিমাণ ল্যাকটোজেন খাওয়াতে বলে হয়েছে ঠিক সেই পরিমাণ ল্যাকটোজেন খাওয়াতে হবে। নির্দেশিত পরিমাণের থেকে কম বা বেশি খাওয়ানো যাবে না।

বয়স অনুযায়ী ল্যাকটোজেন খাওয়ানোর নিয়ম

০-৬ মাস পর্যন্ত প্রতিদিন সর্বনিম্ন ১২৫ মিলিগ্রাম থাকে সর্বোচ্চ ১৮০ মিলিগ্রাম প্রর্যন্ত

৬-১২ মাস পর্যন্ত প্রতিদিন সর্বনিম্ন ১৮০ মিলিগ্রাম থাকে সর্বোচ্চ ২৪০ মিলিগ্রাম প্রর্যন্ত

১-৩ বছর পর্যন্ত প্রতিদিন সর্বনিম্ন ২৪০ মিলিগ্রাম থাকে সর্বোচ্চ ৩০০ মিলিগ্রাম প্রর্যন্ত

ল্যাকটোজেন 1 এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

ল্যাকটোজেন 1 খুব গবেষণা করে তৈরী করা হয়েছে এই কারণে ল্যাকটোজেন 1 এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খুব একটা নেই। তবুও বিভিন্ন কারণে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হতে পারে। তাই আপনাদের সুবিধার্থে এর সম্ভাব্য কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া উল্লেখ করা হল যাতে আপনারা ঝুকিমুক্ত থাকতে পারেন।

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিম্নরুপঃ

অ্যালার্জি
শ্বাসকষ্ট
চোখ ফোলা
বমি বমি হওয়া
মুখ ফোলা
ত্বকের লাল লাল দাগ হওয়া
জিহ্বা ফোলা
মাথা ব্যথা
মাথা ঘোরা
হজমের সমস্যা
ডায়রিয়া
ক্লান্তি ভাব
পেট ফাঁপা ও ব্যথা হওয়া
কিডনিতে পাথরের ঝুকি বাড়াতে পারে

এগুলো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়া শিশুদের ল্যাকটোজেন খাওয়ানোর পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহন করতে হবে। কারণ চিকিৎরা শিশুদের শারীরিক অবস্থার উপর নির্ভর করে ল্যাকটোজেন খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। এজন্য ভুলেও পরামর্শ ব্যতিত এটি শিশুদের খাওয়ানো যাবে না।

ল্যাকটোজেন কয় ধরণের

বর্তমান বাজারে কৃত্রিম ল্যাকটোজেন পাওয়া যায় যেমনঃ ল্যাকটোজেন - ১ , ল্যাকটোজেন - ২ , ল্যাকটোজেন - ৩ , ল্যাকটোজেন - ৪ ইত্যাদি। এগুলো শিশুদের বয়স অনুসারে খাওয়ানো হয়। কারণ শিশুদের বয়স অনুসারে শারীরিক বৃদ্ধি হয় এবং শারীরিক বৃদ্ধি অনুসারে পুষ্টির প্রয়োজন বাড়ে। তাই এগুলো সঠিকভাবে প্রয়োগের জন্য ল্যাকটোজেনকে ভাগ করা হয়েছে।

ল্যাকটোজেন ১ দাম কত ২০২৩

বর্তমান বাজার অনুসারে ল্যাকটোজেন এর দাম

ল্যাকটোজেন - ১ (৩৫০ গ্রাম) এর দাম ৬৫০ টাকা

ল্যাকটোজেন - ২ (৩৫০ গ্রাম) এর দাম ৬৭০ টাকা

ল্যাকটোজেন - ৩ (৩৫০ গ্রাম) এর দাম ৬৭০ টাকা

ল্যাকটোজেন - ৪ (৩৫০ গ্রাম) এর দাম ৬০০ টাকা

ব্যক্তিগত মতামত

ল্যাকটোজেন 1 এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। আশা করি আজকের পোষ্টটি আপনাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমি আশা করি যে আপনারা যে ধরনের তথ্য গুগলে খুঁজছিলেন সেসকল তথ্য আমার এই আর্টিকেলে প্রদান করা হয়েছে।

কারণ এই আর্টিকেলে lactogen সম্পর্কে সকল তথ্য প্রদান করা হয়েছে। আজকের পোষ্টটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আর এরকম সব গুরুত্বপূর্ণ, তথ্যমূলক ও জীবন সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যার সমাধান পেতে www.proudwin.com এর সাথেই থাকুন ধন্যবাদ।

স্বাস্থ্য