অতিরিক্ত লবণ খাচ্ছেন? জেনে নিন কী ক্ষতি হতে পারে

 অতিরিক্ত লবণ খাচ্ছেন? জেনে নিন কী ক্ষতি হতে পারে

প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় লবণ অপরিহার্য একটি উপাদান। কিন্তু পরিমাণের চেয়ে বেশি লবণ খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুযায়ী, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক ৫ গ্রামের কম(প্রায় এক চা চামচ) লবণ খাওয়া উচিত। কিন্তু প্রক্রিয়াজাত খাবার, ফাস্ট ফুড, এবং বাড়িতে রান্নায় অতিরিক্ত লবণের ব্যবহারের কারণে অনেকেই এই সীমা ছাড়িয়ে যান। জেনে নিন অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার ক্ষতিকর দিকগুলো:

 ১. উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি 

লবণের মধ্যে থাকা সোডিয়াম রক্তনালিতে তরল পদার্থের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়, ফলে রক্তচাপ বেড়ে যায়। দীর্ঘদিন উচ্চ রক্তচাপ থাকলে হৃদপিণ্ডের ওপর চাপ পড়ে, যা হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, বা হৃদযন্ত্রের দুর্বলতার কারণ হতে পারে।

 ২. কিডনির ক্ষতি 

কিডনি রক্ত থেকে অতিরিক্ত সোডিয়াম ফিল্টার করে শরীর থেকে বের করে দেয়। কিন্তু বেশি লবণ খেলে কিডনির উপর চাপ পড়ে, যা দীর্ঘমেয়াদে কিডনি স্টোন বা কিডনি ফেইলিওরের মতো জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।

৩.হাড়ের ক্ষয় (অস্টিওপরোসিস)  

অত্যধিক সোডিয়াম প্রস্রাবের মাধ্যমে ক্যালসিয়াম বের করে দেয়, যা হাড়ের ঘনত্ব কমিয়ে অস্টিওপরোসিসের ঝুঁকি বাড়ায়। বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়।

৪. পাকস্থলীর ক্যান্সারের সম্ভাবনা  

গবেষণায় দেখা গেছে, লবণযুক্ত প্রক্রিয়াজাত মাংস (বেকন, সসেজ) এবং আচার পাকস্থলীর ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। লবণ পাকস্থলীর মিউকোসাল লেয়ারকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, যা ক্যান্সার সেল গঠনে ভূমিকা রাখে

 ৫. শরীরে ফোলাভাব   

সোডিয়াম শরীরে পানির ধারণক্ষমতা বাড়ায়, ফলে হাত-পা, পায়ের গোড়ালি, বা মুখে ফোলাভাব দেখা দিতে পারে। এটি স্থূলতা বা অস্বস্তির কারণও হতে পারে।

কীভাবে লবণ কম খাবেন 

 প্রক্রিয়াজাত খাবার (চিপস, নুডলস, ক্যানড সূপ), ফাস্ট ফুড, এবং বাইরের প্যাকেটজাত খাবার এড়িয়ে চলুন।  

- খাবার টেবিলে আলাদা লবণ যোগ করা থেকে বিরত থাকুন।  

- রান্নায় লবণের পরিমাণ কমিয়ে লেবু, রসুন, আদা, বা গোলমরিচের মতো মশলা ব্যবহার করুন।  

- খাদ্য লেবেলে "সোডিয়াম" এর পরিমাণ চেক করুন—প্রতি ১০০ গ্রামে ১২০ mg-এর কম হলে ভালো।  

সতর্কতার লক্ষণ  

ঘন ঘন পিপাসা পাওয়া, মাথাব্যথা, প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া, বা দেহ ফুলে গেলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।  

উপসংহার

লবণ খাওয়া একেবারে বন্ধ করা নয়, পরিমিতি বজায় রাখাই লক্ষ্য। স্বাদ গ্রহণের পাশাপাশি সচেতন হয়ে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করুন। ছোট পরিবর্তনই দীর্ঘমেয়াদে সুস্থ জীবন দেবে!